নারীর সঙ্গে আপনার আচরণ যেমন হবে!

 

 

আমার দাদা উদাহরণ দিতে গিয়ে প্রায়ই একটি আরবি প্রবাদ বাক্য বলতেন, ‘কেউ যদি নিজের ছাগীর আবেগ না বোঝে  তাহলে ছাগী নিজেই তার সঙ্গী খুঁজে নেয়।’ অর্থাৎ স্বামী যদি স্ত্রীর আবেগ অনুভূতি বুঝতে চেষ্টা না করে এবং তার জৈবিক চাহিদা না মেটায় তাহলে সে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।

নারী-পুরুষকে ছাগল ও ছাগীর সঙ্গে তুলনা করা এ প্রবাদ বাক্যের উদ্দেশ্য নয়। আল্লাহ মাফ করুন। নারী তো পুরুষেরই অর্ধাঙ্গিনী। জীবনের সহযাত্রী। নারী পুরুষ কেউ কারো এক্সেয়ে খাটো নয়। পুরুষকে যদি আল্লাহ তায়ালা দিয়ে থাকেন দৈহিকশক্তি, তাহলে নারীকে দান করেছেন প্রবল আবেগ-অনুভূতি। ইতিহাসের কত রাজা-বাদশাহ, বীর-বাহাদুরকে আমরা দেখেছি, নারীর আবেগ-উচ্ছ্বাসের কাছে হার মেনেছে তাদের সব সৌর্য-বীর্য ও বুদ্ধি-সামর্থ্য।

নারীর সঙ্গে আচার-আচরণের কৌশলও আয়ত্ত করতে হয়। নারীর মন জয় করার চাবিকাঠি অর্জন করতে হবে। আর নারীর মন জয়ের সে চাবিটি হলো আবেগ। বস্তুতঃ আবেগ দিয়েই নারীকে কুপোকাত করতে হয়।

রাসূল আমাদেরকে নারীর সাথে সদাচরণ করতে আদেশ করেছেন। তার আবেগ ও অনুভূতি মূল্যায়ন করতে বলেছেন। এর মাধ্যমে আপনার জীবন হবে শান্তিময়। ঘর হবে সুখের ঠিকানা।

রাসূল পিতাকে তার কন্যাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার আদেশ করেছেন। রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ-

আনাস ইবনে মালেক (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ‘সাবালক হওয়া পর্যন্ত দু’টি কন্যা সন্তানকে লালন-পালন করবে, হাশরের মাঠে আমি ও সে এভাবে থাকব। এ কথা বলে রাসূল হাতের দুটি আঙ্গুল একত্র করএ দেখালেন।’ (সহীহ মুসলিমঃ৪৭৬৫)

নারীর ব্যাপারে সন্তানদেরকেও রাসূল এমন নির্দেশ দিয়েছেন।

জৈনিক ব্যক্তি রাসূলকে একদিন জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সদাচরণ পাওয়ার সবচেয়ে বেশি হকদার কে?

রাসূল বললেন, ‘তোমার  মা।’

লোকটি বললো, “তারপর?”

‘তোমার মা।’

‘তারপর?’

‘তোমার মা।’

এভাবে তিনবার বলার পর চতুর্থবার রাসূল বললেন, ‘তারপর তোমার বাবা।’

শুধু এতটুকু নয়, স্বামীকেও তিনি স্ত্রীর সঙ্গে সুন্দর আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। যে ব্যক্তি স্ত্রীর সঙ্গে রাগারাগি করে কিংবা দুর্ব্যবহার করে, রাসূল (সাঃ) তার নিন্দা করেছেন।

বিদায় হজ্জের দিন। রাসূল (সাঃ) জীবনের শেষ খুতবা দিচ্ছেন। রাসূলের সামনে উপস্থিত লক্ষাধিক সাহাবী। সাদা, কালো, ছেলে, বুড়ো, ধনী-গরিব সবাই উৎকর্ণ হয়ে আছে।

রাসূল (সাঃ) সবার সামনে সরবে বললেন—

‘হে লোকসকল! তোমরা নারীদের সঙ্গে সদাচারণের ব্যাপারে আমার অন্তিম উপদেশ গ্রহণ কর। কেননা, তাঁরা তোমাদের নিকট আবদ্ধ। তোমরা তাদের ব্যাপারে কোনো মালিকানা রাখোনা। তবে তাঁরা কোনো প্রকাশ্য অশ্লীল কর্মকান্ডে লিপ্ত হলে ভিন্নকথা। যদি তাঁরা প্রকাশ্যে কোনো অশ্লীল কর্মকান্ডে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের বিছানা আলাদা করে দাও এবং তাদেরকে অল্প প্রহার কর। যদি তাঁরা তোমাদের আনুগত্য স্বীকার করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পন্থা অবলম্বন করতে যেও না। নিশ্চয় তাদের উপর তোমাদের কিছু হক রয়েছে এবং তাদেরও তোমাদের উপর রয়েছে কিছু হক। তোমাদের অধিকার তোমাদের স্ত্রীদের উপর হলো তাঁরা তোমাদের বিছানায় কাউকে জায়গা দিবে না যাকে, তোমরা অপছন্দ কর। তোমাদের ঘরে এমন কাউকে প্রবেশ করতে দিবে না যাদের প্রবেশ করাটা তোমাদের নিকট সন্তোষজনক নয়। তোমরা জেনে রাখ, তাদের অধিকার তোমাদের উপর হলো তোমরা তাদের সাথে সুন্দর আচরণ করবে তগাদের খাওয়া দাওয়া ও ভরণপোষণের  ব্যবস্থা করবে। (সহীহ মুসলিমঃ ২৬৭১, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৮৫১)

একদিন নবীপত্মীগণের কাছে কিছু মহিলা এলো। তাঁরা তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করলো। রাসূল এ কথা শুনে সাহাবীদের ডেকে বললেন—

‘মুহাম্মদের পরিবারের কাছে অনেক মহিলা এসে তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। জেনে রাখ, যারা স্ত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ করে তাঁরা ভালো লোক নয়।’

তিনি আরো বলেছেন—

‘তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো সে ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর কাছে সবচেয়ে ভালো। স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচরণের ক্ষেত্রে আমি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো।’  (সুনানে তিরমিযীঃ ৩৮৩০, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ১৯৬৭)

ইসলাম নারীকে এত মর্যাদা দিয়েছে যে, একজন নারীর মান রক্ষার্থে বিশাল যুদ্ধ হয়েছে। অনেক বীর বাহাদুর তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছে। রক্তের বন্যা বয়ে গেছে।

মদিনায় কিছু ইহুদিও বসবাস করত। এ জন্য তাঁরা মুসলমানদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিল। পর্দার বিধান অবতীর্ণ হলে তাঁরা মনে মনে ক্ষুধ হলো। মুসলিম রমণীরা পর্দা করুক এটা ইয়াদের কাছে ভালো লাগছিল না। তাই তাঁরা মুসলিম নারীদের মাঝে বিশৃঙ্খলা ও বেপর্দার মনোভাব সৃষ্টি করতে চেষ্টা করলো। কিন্তু তাঁরা তাতে ব্যর্থ হলো।

একদিন জনৈক মুসলিম নারী বনু কায়নুকার বাজারে গেলেন। তিনি ছিলেন পর্দারত। বাজারে গিয়ে তিনি এক ইহুদি স্বর্ণকারের দোকানে বসলেন। সে নারীর হিজাব এবং তার চারিত্রিক নিঙ্কলুষতা দেখে ইহুদিদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হলো। তাঁরা তার মুখমন্ডল এক নজর দেখার জন্য ছটফট করতে লাগল। তাঁকে স্পর্শ করতে এবং তাঁকে নিয়ে ‘আদিম খেলায়’ মেতে ওঠার চিন্তায় তাঁরা বিভোর হয়ে গেল।

ইসলামপূর্ব যুগে নারীদের সাথে তাঁরা যে ধরণের আচরণ করত, এ মুসলিম রমণীর সঙ্গেও তাঁরা তাই করতে চাইল। তাঁরা তার চেহারা উন্মোচন করতে পীড়াপীড়ি করলো এবং হিজাব খুলে ফেলার জন্য তাকে ফুসলাতে লাগল। কিন্তু নারীটি চেহারা খুলতে অস্বীকার করলো। সে ইহুদি সুযোগে তার পেছন দিক থেকে তার কাপড়ের নিচের অংশ পিঠের ওপর ঝুলে পড়া ওড়নার অংশবিশেষের সঙ্গে বেঁধে দিল।

মহিলা যখন যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াল, তখন তার কাপড়ের পেছন দিক থেকে কিছু অংশ ওপরে উঠে গেল এবং শরীরের কিছু অঙ্গ উন্মোচিত হয়ে পড়ল। এ অবস্থা দেখে ইহুদিরা হাসতে লাগল। মহিলা সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠল। লজ্জায় সে আড়’হয়ে গেল। সে মনে মনে কামনা করছিল, ‘এরা যদি আমার পর্দায় আঘাত না করে আমাকে হত্যা করে ফেলত তাহলে ভালো হতো।’

জনৈক মুসলমান বিষয়টি লক্ষ্য করলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তরবারি বের করে সে স্বর্ণকার ইহুদিকে শেষ করে দিলেন। এ ঘটনা দেখে সঙ্গী ইহুদিরা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেল। তাঁরা সবাই মিলে তাঁকে হত্যা করে ফেললো। রাসূল যখন জানলেন ইহুদিরা চুক্তি ভঙ্গ করে একজন মুসলিম রমণীর সম্ভ্রমহানি করেছে তখন তিনি ইহুদিদের এলাকা অবরোধ করলেন।

অবরুদ্ধ থাকার পর তাঁরা আত্মসমর্পণ করলো এবং তাদের ব্যাপারে রাসূলের যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে সম্মত হলো।

রাসূল যখন তাদেরকে শাস্তি দিতে চাইলেন তখন মুসলিম নামধারী শয়তানের এক চেলা বাধা হয়ে দাঁড়াল। তার কাছে একজন মুসলিম নারীর ইজ্জতের কোনো মূল্য নেই। নারীর মান রক্ষার কোনো খেয়াল তার নেই। উদর ও যৌনাঙ্গের কামনা-বাসনা চরিতার্থ করাই তার জীবনের মূল লক্ষ্য।

সে  ছিল মুনাফিক সরদার আবদুল্লাহ বিন উবাই। সে দাবি তুলল, ‘আমার মিত্র ইহুদিদের প্রতি অনুগ্রহ করুন।’

জাহেলী যুগে এ ইহুদিরা তার সহযোগী ছিল। রাসূল তার এ দাবি মানতে অস্বীকার করলেন। যারা সবসময় মুসলমানদের মাঝে অশ্লীলতা ছড়ানোর দূরভিসন্ধি আঁটতে থাকে, তাদের ক্ষমা করার সুপারিশ সে কিভাবে করলো? আর রাসূল (সাঃ) এ দাবি কিভাবে মানবেন?

কিন্তু মুনাফিক নাছোড়বান্দা। রাসূলকে আবারও সে বললো, ‘হে মুহাম্মদ! এদের সাথে সদ্ব্যবহার করুন।’

রাসূল এবারও মুসলমানদের মান সম্মান, নারীদের আত্মমর্যাদাবোধের কথা চিন্তা করে আবদুল্লাহ বিন উবাইর আবেদন প্রত্যাখ্যান করলেন।

মুনাফিক সরদার তখন রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। সে রাসূলের লৌহবর্মের ভেতর হাত ঢুকিয়ে টানাটানি করতে লাগল আর বলতে লাগল, ‘আমার মিত্রদের প্রতি সদাচরণ করুন। আমার মিত্রিদের প্প্রতি সদাচরণ করুন।’

রাসূল রাগান্বিত হলেন। এরপর সজোরে বললেন, ‘আমাকে ছেড়ে দাও’।

কিন্তু নির্লজ্জ মুনাফিক সরদার তা সত্ত্বেও ইহুদিদেরকে বাঁচাতে পীড়াপীড়ি করতে লাগল। অবশেষে চোখলজ্জায় দ্যার নবী বললেন, ‘ঠিক আছে, তাদের ব্যাপারে তোমরা কথাই থাকল।’

রাসূল প্রাণদন্ড থেকে তাদের মুক্তি দিলেন। তবে পবিত্র ভূমি মদিনা থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করলেন। তাদেরকে এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দিলেন।

একজন নারীর মান রক্ষার জন্য প্রয়োজনে এর চেয়েও কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দ্বিধা করা যাবে না।

খাওলা বিনতে সা’লাবাহ ছিলন পূণ্যবতী এক মহিলা সাহাবী।

তার স্বামী আওস বিন সামেত ছিলেন খুব বৃদ্ধ। একটু এদিক সেদিক হলেই তিনি রেগে যেতেন। একদিন তিনি গোত্রীয় বৈঠক থেকে ফিরে খাওলার কাছে এসে তাঁকে একটা কাজ করতে বললেন। কিন্তু খাওলা কাজটি করতে অস্বীকার করলো। এতে উভয়ের মাঝে ঝগড়া বেঁধে গেল।

ঝগড়ার একপর্যায়ে আওস রেগে গিয়ে বললেন, ‘তুমি আমার জন্য আমার মায়ের পিঠের মতো!’ এ কথা বলে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।

জাহেলীঈ যুগে কেউ একথা বললে তার স্ত্রী তালাক হয়ে যেতো। কিন্তু এ ব্যাপারে ইসলামের বিধান কী-খাওলা তা জানতো না।

আওস ঘরে ফিরে লক্ষ্য করলেন, খাওলা তার থেকে দূরত্ব ব্জায় রেখে চলছেন। একপর্যায়ে খাওলা তাঁকে বললেন, ‘কসম সে সত্তার, যার হাতে খাওলার প্রাণ! তুমি যা বলার তা তো বলেই  ফেলেছ। এ ব্যাপারে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের বিধান কী তা না জেনে তুমি আমার কাছে আসতে পারবে না।’

এরপর খাওলা রাসূলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। রাসূলের কাছে গিয়ে স্বামীর বক্তব্য তুলে ধরলেন। এরপর স্বামীর পক্ষ থেকে সেসব দুর্ব্যবহার অসদাচরণের শিকার হতেন তা জানালেন।

রাসূল সবকিছু শুনে তাঁকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বললেন, ‘হে খাওলা! সে তোমার চাচাতো ভাই এবং একজন বৃদ্ধ মানুষ। তার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর।’

রাসূলের কথা শুনে খাওলা অশ্রুসজল চোখে বললো, ‘হে আল্লাহর রাসূল! যৌবনকালে সে আমাকে বিয়ে করেছে। আমার যৌবন তার হাতে নিঃশেষ হয়েছে। তার সন্তান ধারণের জন্য আমার উদর নিবেদিত হয়েছে। এখন আমার জীবন যৌবন যখন শেষ, সন্তান ধারণের ক্ষমতা আর নেই তখন সে আমাকে তালাক (যিহার) দিল?!’

‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছেই অভিযোগ করছি।’

রাসূল এ সম্পর্কিত বিধান জানতে ওহীর অপেক্ষা করছিলেন। খাওলা তখনো রাসূলের কাছে উপস্থিত। ইতোমধ্যে জিবরাঈল (আঃ) উপস্থিত হলেন । আলোচ্য সমস্যার সমাধান নিয়ে তিনি এসেছেন।

রাসূল খাওলাকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘খাওলা! তোমার স্বামী ও তোমার ঘটনার সমাধান নিয়ে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে।’ এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন—

‘(হে নবী!) আল্লাহ সে নারীর কথা শুনেছেন, যে তার স্বামীর ব্যাপারে আপনার সঙ্গে বাদানুবাদ এবং আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছে। আল্লাহ আপনাদের কথোপকথন শুনছেন। নিশ্চুয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সূরা মুজাদালাহঃ ১)

এভাবে সুরা মুজাদালার শুরু হতে শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করে খাওলাকে বললেন,

‘তোমার স্বামীকে বলে দাও সে যেন একটি গোলাম আজাদ করে দেয়।’

খাওলা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! তার তো কোনো গোলাম নেই।’

রাসূল (সাঃ) ‘তাহলে তাঁকে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখতে বল।’

খাওলাঃ ‘সে তো অতিশয় বৃদ্ধ। এভাবে রোযা রাখার সামর্থ্যও তার নেই।’

রাসূল (সাঃ) ‘তাহলে তাঁকে বল, সে যেন সত্তরজন মিসকিনকে এক ওয়াসক করে খেজুর দিয়ে দেয়।’

খাওলাঃ ‘তার কাছে খেজুরও নেই।’

রাসূল (সাঃ) ‘তাহলে আমি এক ঝুড়ি খেজুর দিয়ে তাঁকে সাহায্য করব।’

খাওলাঃ ‘তাহলে আমিও তাঁকে এক ঝুড়ি খেজুর দেব।’

রাসূল বললেন, ‘বেশ ভালো। যাও, তার পক্ষ থেকে এগুলো দান করে দাও। আর তার সঙ্গে সদাচরণ কর’।(আহমদ ও আবূ দাউদ)

সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ তার রাসূলকে সকলের সঙ্গে কোমলতা ও সহনশীলতা প্রদর্শনের মতো চারিত্রিক গুণ দান করেছিলেন। এমনকি মানুষের ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধানেও তিনি ছিলেন আন্তরিক ও উদার।

আমি নিজেও আমার স্ত্রী-কন্যাদের সঙ্গে কোমল ও আবেগী আচরণ করে দেখেছি। এর আগেও করেছি মা ও বোনের সঙ্গে। আমি এর কার্যকর ও সদূরপ্রসারী প্রভাব উপলব্ধি করেছি। এসব আচরণ কৌশলের অনুশীলন ছাড়া কেউ এর প্রভাব উপলদ্ধি করতে পারবে না।

এ আলোচনার শেষ পর্যায়ে একটি বাস্তব সত্য বলছি, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরাই নারীকে সম্মান করে। আর ইতর ও নিম্ম শ্রেণির লোকেরাই নারীকে অবমাননা করে।

একটু থাকুন…

স্বামীর দরিদ্রতা, চেহারার শ্রীহীনতা ও নানামুখি  ব্যস্ততা স্ত্রী মেনে নিতে পারে, কিন্তু স্বামীর অসদাচরণ ও রূঢ় ব্যবহার সে কখনো মানতে পারে না।